মোবাইলের হেডফোনটা পকেটে রাখার পর প্রয়োজনের সময় বের করলে অনেক প্যাচ/জট লেগে যায়। মাথায়ই আসেনা এত প্যাচ কেমনে লাগে! মনেহয় বাবুই পাখির বাসার মত প্যাচ।আমাদের ল্যাবের আর একজন ৪৬ বছর বয়সী পিএইচডি স্টুডেন্টকে জট গুলো দেখানোর পর সে তার হেডসেট টা দেখালো সুন্দর করে সাজানো। সে বললো এভাবেই সে পকেটে রাখে। আমার এক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধু প্রতি ইয়ারে দেখেছি নোট গুছিয়ে রাখতো। এভাবে গুছিয়ে রাখার কারনেই তার রেজাল্ট ভালো হতো। যদিও অগোছালো মানুষগুলোর মাথায় বুদ্ধি বেশি থাকে, কারন অগোছালো মানুষগুলো একটু ড্যাম কেয়ারের হয়, সিচুয়েশন মানিয়ে নিতে পারে, স্ট্রেস নিতে পারে। তবে সাজানো গুছানো লাইফে ঝক্কি ঝামেলা হয় খুব কমই।
গুছিয়ে না রাখলে হেডফোনটা বের করে জট খুলতেই অনেক সময় চলে যায়, জীবনকে গুছিয়ে রাখতে না পারলে জীবন নানা জটের মধ্যে পড়ে যায়। একটার পর আর একটা জটে,জীবনের ক্ষয় হতে থাকে। সময়ের কাজ তাই সময়ে করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবন নানা জটের পাকে ঘুরতে থাকে, মানুষ জট থেকে বের হওয়ার সংগ্রামে তখন ছুটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু জট থেকে মুক্ত হওয়া তখন আর হয়ে উঠেনা। এক জট থেকে র এক জট।
২০ এর পরে জীবনবোধ আর ৩০ পেরিয়ে জীবনবোধের যে বিশাল পার্থক্য সেটি কেবল বয়স হলেই বুঝা সম্ভব। ২০ এর জীবনবোধ হলো ঝড়ো বাতাসে উড়ন্ত ঘুড়ির মত। রোমাঞ্চ আর উত্তজনায় ভরপুর, কখনও মনেহয় হয়ত ফেটেই যাবে বাতাসে, কখনও একদিন তো কখনও আর একদিন, এই বুঝি সুতা ছেড়ে উড়ে পরে যায় কোথাও তারপরও ভ্রুক্ষেপ থাকেনা কোথাও।
আর ৩০ এর জীবনবোধ হলো, মৃদু কোমল বাতাসে উড়ন্ত ঘুড়ি, যার মধ্যে উত্তজনা কম, শুধু উড়তেই থাকে তার মধ্যে পড়ে যাওয়ার লক্ষন খুব একটা দেখা যায় না যদি সুতাটা মজবুদ থাকে তো।
মানুষ ইচ্ছে করলেও হয়ত তার পূর্বের সময়ে ফিরতে পারে না। আর শৈশবও হয়ত হারিয়ে যায় কালের গর্ভে, কারন সব প্রজন্মের শৈশব এক হয় না। এখনো ভাবি গ্রামে বর্ষার টইটুম্বুর পানিতে কলা গাছের ভেলায় চড়িয়ে কাটানো শৈশবের আনন্দ এখনকার সময়ের শৈশব হয়ত পুকুরের পানিতে ডুবে উপভোগ করার চেষ্টা করে।
জীবনবোধটি আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস।
সবার জীবন সাজানো গুছানো হোক, জীবনের জট কাটিয়ে জীবন টা সবার সহজ সরল হোক, এই কামনা করি।