প্রফেসর সাইদুর রহমান খান এলেন আমাদের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে। আমরা তখন চতুর্থ বর্ষে পড়ি। বিভাগে অনেকদিন স্ট্যাডি লিভ শেষ করে লাইসা ম্যাডাম আসলেন। পুরো করিডোরে অন্যরকম ভাব যা আগের কয়েকবছর ছিলোনা। অনুষ্ঠান রুমে চারিদিকে মংগল প্রদীপ। স্যার স্টেজে উঠেই অনেক কড়াভাষায় সমালোচনা করলেন মংগল প্রদীপ নিয়ে। মংগল প্রদীপ যে বাংগালীদের কালচার নয় সেটি ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
আজ ফেইসবুকে মানুষের পোষ্ট দেখে কেন জানি মনে হচ্ছিলো আমরা ব্যাকুল হয়ে উঠেছি নিজেদের আধুনিক প্রমান করতে। হয়ত অনেকেই ব্যাক ডেটেড মনে করবে কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা যা করছি সেটি আমাদের দিকে ফিরে আসবে বাস্তব সত্য হিসেবে। মাঝে মাঝে ভয় হয় আমরা ধর্মহীনতার দিকে ধাবিত হচ্ছিনাতো??
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। যদি আজ থেকে ২০-৩০ বছর পেছনে ফিরে তাকান তাহলে দেখতে পারবেন আজকের বাংগালীর কালচার আর সেসময়ের গ্রাম বাংলার সংষ্কৃতির মধ্যে অমিল অনেক। তাই মাঝে মাঝে ভয় হয় আমরা বাংগালী পরিচয়ও কি ভূলে যাচ্ছি??
বন্য পশুপাখীর মুখোশ পড়ে র্যালী করাটা আসেলই কি বাংগালি পরিচয় বহন করে??
সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে আমরা অজানার দিকে পাড়ি দিচ্ছি। দেশে ক্রমশ দুটি ধারা দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতার একটি ধারা অপরটি ধর্মভিত্তিক ধারা আস্ত আস্তে মানুষ এই দুটি ধারার দিকে বিভক্ত হয়ে পড়ছে ব্যবধান ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিগত দিনের বাংলাদেশ হয়ত ভবিষ্যতে অন্য পরিচয়ে পরিচিত লাভ করবে হয়ত সেখানে ধর্মহীনতা/অপধর্মই একটি ধর্ম হয়ে উঠবে। ফলে শান্তিময় ধর্মীয় ধারার সাথে ক্রমশ বর্ধমান ধর্মহীন ধারার সংঘর্ষ আরো ব্যাপকতা লাভ করবে। শান্তিময় ধর্মীয় ধারার মানুষ গুলো সংখ্যালঘুতে পরিনত হবে।
সমাজে যৌনতার ব্যাপকতা লাভ করবে। মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষগুলো নিজেদের স্ট্যাটাস পরিবর্তনের নামে এসবে গা ভাসিয়ে দিয়ে নিজেদের সভ্য প্রমান করতে গিয়ে অনর্দ্বন্দ্বে পতিত হবে। ফলে পুরো সমাজ একটি বর রোগে আক্রান্ত হবে পারিবারিক অনুশাসনের প্রভাব কমে যাওয়ার ফলে পরিবারের কর্তৃত্ব অনেকটা হ্রাস পাবে। দূর্বৃত্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলো যৌনতা উস্কে দিয়ে সমাজকে একটি ভোগবাদী সমাজে পরিনত করে রাখবে যাতে করে ধর্মীয় শক্তিগুলোর প্রভাব করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
সব কিছুর মূলে হলো নিজেদের পরিচয় এবং কালচার কে বুঝতে না পারা। আমাদের উচিত আমাদের পরিচয় কে বুঝে সেভাবে পথ চলা, যারা চান আপনার আমার বাচ্চা ইসলামিক পরিবেশে বড় হোক তাদের উচিত এখনই পদক্ষেপ গ্রহন করা নয়ত সময় চলে গেলে বাস্তবতা সামনে দাড়াবে তখন কিছুই করার থাকবে না।
আল্লাহর কাছে দোয়া করি তেমনটি যেন না হয়।