চারিদিকে একটি শব্দ আঁতাত, আর আঁতাত। শব্দটিতে “ত” থাকায় কেমন জানি তিতা তিতা জিনিস মনে হয়। তিতা জিনিস খাইতে খারাপ লাগলেও পেট নাকি ভালো রাখে। করলা তিতা হলেও ভাজি ভালো করতে পারলে মন্দ লাগেনা। সেদিন মসুর ডাল আর করলা ভাজি খেলুম, কি দারুন স্বাদ মনে হলো মায়ের হাতের রান্না খেলুম। সে যা বলছিলাম, আঁতাত। আঁতাত নাকি এখন বংগভবন, শাহবাগ, গুলশান সবখানে। ভারতের সাথে আওয়ামীলীগের আঁতাত, এরশাদের সাথে আওয়ামী লীগের আঁতাত, জামায়াতের সাথে আওয়ামীলীগের আঁতাত, শাহবাগে নাকি শিবিরের আঁতাত। রাজনীতিকে “আঁতাত” এ খেয়ে ফেলেছে। রাজনীতিতে মানুষ যখন হেরে যায় তখন মানুষ নানা বাহানা খুজে, সবার রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে জামায়াতে যোগ দেয়া উচিত। কারন সবাই গা বাঁচতে জামায়াতের সাথে আঁতাত করছে তারমানে জামায়াত অবশ্যই একটি ফ্যাক্টর হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পেরেছে। সবার আদর্শ নষ্ট হয়ে গেছে জামায়াত-শিবির মাইর খেয়েও নিজেদের আদর্শ নিয়ে টিকে আছে। তাই লেজ কাটা সব শেয়াল এখন সবখানেই আঁতাত খুজে ফিরে, নিজেদের অক্ষমতায় সান্ত্বনা খুজে। আঁতাত শব্দটি শুনতে খারাপ লাগলেও আঁতাতের ফল কিন্তু অনেক মিষ্টি হয়।
বিএনপি জামায়াতের সাথে জোট করে আছে তাতে তাদের সমস্যা হয় না, আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাতের গন্ধ শুঁকে। আওয়ামী লীগ যখন জোট করেছিলো তখন নাকি সমস্যা হয় নি এখন নাকি তাদের সমস্যা। ছাত্রলীগ থেকে শুরু সব জায়গায় নাকি শিবির, ছাত্রলীগের কমিটিতে শিবির, শাহবাগে শিবির, ছাত্রদলে শিবির, সেদিন দেখলাম বিএনপির ভোটের দ্বায়িত্বো নাকি জামায়াত-শিবির।
আর এক এরশাদ চাচা, বেচারা আওয়ামীলীগের সাথে জোট করলে বিএনপির মন বেজার, বিএনপির সাথে করলে আওয়ামীলীগের মন বেজার। এরশাদ কে খুনি, লুইচ্চা যার যা ইচ্ছে বলে তুলোধুনো করে পরে গোপনে জোটের জন্য তদবির করে।
রাজনীতির কথা বলি, যারা রাজনীতি বুঝে তারা “আঁতাত” করে ই চলে। পুলিশের সাথে যেমন কিছু সন্ত্রাসী আঁতাত করে চলে। তেমনি “আঁতাত” জিনিসটা জীবনের জন্য জুরূরী।
“আঁতাত” আছে বলেই নারীর ক্ষমতায়নের যুগে নির্যাতিত স্বামীরা স্ত্রীর সাথে “আঁতাত” করে চলে। রাজনীতির দেউলিয়াপনার যুগে রাজনৈতিক বড় ভাইদের সাথে “আঁতাত” করে বিরোধীপক্ষকে ক্যাম্পাসে থাকা লাগে।
কেউ স্বীকার করুন আর নাই করুন সবচেয়ে বড় সত্য হলো যুদ্ধাপরাধ র মুক্তিযুদ্ধের বিষয়গুলো নিয়ে আওয়ামীলীগের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। মানুষকে মৃত্যুদন্ড দিলেই সত্য চাপা পড়বে না, সত্য তার মতই উদ্ভাসিত হবে নব শক্তিতে। দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুদন্ড দিলেও মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সাঈদী রাজাকার হয়ে যাবেনা, ঠিক তেমনি কাদের মোল্লাকে কসাই কাদের নাম দিয়ে মৃত্যু দন্ড দিয়েও নিজেদের রাজনীতির মৃত্যু ঢাকা রোধ করা যাবেনা।
ভাবছিলাম রাজনীতি নিয়ে কিছু লিখবো না। হঠাৎ লিখতে বসলাম।
সবচেয়ে বড় সত্য হলো কেউ স্বীকার করুন আর নাই করুন। বড় দু-দলের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে। জামায়াত কখনই কারো কাধে হাত দিয়ে পাড় হয়নি। আমার বিশ্লষনে বরং বড় দু-দল জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে, এখনও করছে। জামায়াত নেতার মৃত্যু জামায়াতের অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে পারেনি, পারবেও না। তবে জিয়া আর বংগবন্ধুকে নিয়ে এখনো রাজনীতি হয়।
জামায়াত-শিবির ব্যক্তিনির্ভর কোন দল নয়, এটি বুঝতে দেরি হলে আগামী বছরগুলোতে সবাই বুঝে যাবে। শেখ হাসিনা , খালেদা জিয়া যুগের শেষ হলে দেশের রাজনীতির শুন্যতা পূরনে গলাবাজি খুব একটা কাজ দিব বলে মনে হয় না। তার বড় প্রমান উপজেলা নির্বাচন। তাই “আঁতাত” এর গন্ধ না খুজে নিজেদের আদর্শের চর্চা করুন। ছাত্রসংগঠন গুলোকে ঢালাওভাবে সাজান নয়ত, টেন্ডারবাজীর সাথে একদিন হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যর সব দল।
সবাই মিলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাজনীতি করুক এটাই কামনা করি। গ্রাম বাংলার মানুষগুলো যেমন মিলেমিশে থাকত। বাংলাদেশের সব মানুষ মিলেমিশে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাক আমরা এটাই কামনা করি। দোষারোপের রাজনীতি বন্ধ হোক। ভালো মানুষগুলো দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিক এটাই কামনা করি।
বিঃদ্রঃ রাজনৈতিক কোন বন্ধু লিখায় কষ্ট পেলে দুঃখিত। কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য লিখা হয় নি। বন্ধুত্ব সবার উপরে।