সকল প্রশংসা আল্লাহর! রাসুল (সাঃ) এর শান্তি ও রহমত বর্ষন হোক।
এই বইটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশটিতে সেসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা বিশ্বাস এবং কাজে একজন মুসলিমকে ধারন করতে হয় বা প্রতিফলন ঘটাতে হয়। অনেক মানুষ মুসলিম হয় শুধুমাত্র পরিচয়ের মাধ্যমে, কারন তারা মুসলিম পিতা-মাতা হতে জন্মসূত্রে মুসলিম। তারা হয়ত জানেনা যে প্রকৃত ইসলাম কি এবং মুসলিম হওয়ার জন্য কি কি কাজ করা লাগে, এবং এই কারনে তারা অনেক ধর্মনিরপেক্ষ জীবন যাপন করে। এই প্রথম অংশে মুসলিমদের জ্ঞানী এবং সত্যিকার মুসলিম হওয়ার কর্তব্য সমুহ আলোচনা বা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
বইয়ের দ্বিতীয় অংশে ইসলামের একজন কর্মী এবং ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মীর কি দায়িত্ব-কর্তব্য তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এটি আন্দোলনের প্রকৃতি এবং এর লক্ষ্য, দর্শন, এবং কৌশল পড়ন্তু ইসলামী আন্দোলনের একজন সদস্যের প্রত্যাশিত বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্বে বিশেষ করে আরব বিশ্বে ইসলামী আন্দোলনের ব্যর্থ হওয়ার কারন হলো ইসলামী আন্দোলন এবং সমাজ জীবনে আধাত্নিক শুন্যতা। এমন অবস্থায় ইসলামের মূলনীতি এবং প্রতিষ্ঠান গুলো হারিয়ে যায়। ইসলামি আন্দোলন ভেংগে পড়ে যখন পশ্চিমা কালচারে অভ্যস্ত নেতারা কঠিন চ্যালেন্জের মুখোমুখি হয়। এসব নেতা এবং আন্দোলন এবং সরকারের নিয়ম সমূহ এবং অর্থনীতি যা তারা চাপিয়ে দিয়েছিলো তা ভেংগে পড়ে কারন সেসবের কোন ভালো ভিত্তি ছিলোনা। তারা ব্যর্থ হয়েছিলো কারন সেসব কৃত্রিমভাবে তৈরী এবং অন্য কালচার থেকে নকল করা ছিলো এবং তা মুসলিম সম্প্রদায়কে উপস্থাপন করতো না। এ কারনে তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলো। এই অবস্থাকে মানব শরীরে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের সাথে তুলনা করা যায়। যদিও শরীর এটিকে স্বল্প সময়ের জন্য ব্যাথা সহ সহ্য করতে পারে অবশেষে কিডনিকে বাদ দেয়া লাগে এবং সে মারা যায়।
যখন মুসলিম উম্মাহর অসুস্থ্যতা তীব্র হয়, তখন খুব কম মুসলিমই ইসলামিক নীতির উপর ইসলামী সমাজ গঠন নিয়ে চিন্তা করে। অপরপক্ষে অধিকাংশ মুসলিম গড়া নীতি এবং পদ্ধতি আমদানী করে, যা বাইরে থেকে ভালো মনে হয় কিন্তু সত্যিকার ভাবে তা একেবারে ত্রুটিপূর্ণ হয় এবং সহজে বিচ্যুত হয় এবং ভেংগে পড়ে।
এসব ঘটনার সাথে খাপখাওয়নোর প্রথম ধাপটি ছিলো একচ্ছত্র পুঁজিবাদ। এটি সমাজ, অর্থনীতি এবং রাজনীতির মুল্যবোধকে বিষাক্ত করে তোলে, এবং মুসলিমদের পরিচয় ধ্বংস করে, সংষ্কৃতি। এটি ১৯৪৮ সাথে ইসলামের বিধ্বংসী পরাজয়ের কারন ছিলো।
এই তিক্ত অভিজ্ঞতা ছাড়াও মুসলিমরা জাহিলী এবং পৌত্তলিক প্রথার হাতে বন্দী থেকে গেছে যা বিদেশ থেকে শুরু হয়েছিলো। যদি ১৯৪৮ সালের পরাজয়ের কারন হয়, পশ্চিমাদের অনুসরন, তাহলে ১৯৬৭ সালের পরাজয়ের কারন ছিলো ইউরোপের বাম-পন্থী সর্বহারা বিশেষভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুসরন। এসবের মিথ্যা দ্বারা বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়েছিলো তারা পরাজয়ের আবর্তে নিমজ্জিত হয়েছিলো, এবং তাদের সমাজতান্ত্রিক জোটের তারা পরিত্যাগ হয়েছিলো/ বর্জিত হয়েছিলো।
এসব তিক্ত অভিজ্ঞতা মুসলিমদেরকে তাদের সরকারের উপোর এবং তাদের শুন্য আশ্বাসের উপড় আশাহত করেছিলো/ আশা হারিয়ে ফেলেছিলো। এসব অসহ্য অভিজ্ঞতা তাদেরকে বাস্তবায় জাগিয়ে তুলেছিলো যে, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো তাদেরকে পিষে ফেলতে একত্রিত হয়েছিলো। ইউরোপ-অ্যামেরিকার পশ্চিমা পুজিবাদ এবং রাশিয়ার পশ্চিমার সমাজতন্ত্র “ডানপন্থী এবং বামপন্থী” দুটো ই। শেষে মুসলিমরা শিখতে শুরু করলো যে, তাদের মধ্যে যে শুন্যতা কখনই হোয়াইট হাউসের প্রোগ্রাম, ক্রেমলিন পরিকল্পনা, মার্ক্সের চিন্তা, এবং লেলিন, অথবা চে গুয়েভারা এবং হো চি মিন কারো দ্বারাই পরিপূর্ন হবে না।
মুসলিম উম্মাহকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিমদের স্বতন্ত্র করেছেন অন্যদের থেকে যাতে করে বিশ্বের সকল মানুষ সার্বজনীন সত্যে এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োগ ঘটিয়ে তাদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক জীবনকে উন্নত করতে পারে। মুসলিম এই পরিচয়ের স্বীকৃতি ই হলো বিশ্বের চিন্তা ও রাজনীতির জগতে বিপ্লব ঘটানোর জন্য মুসলিমদের প্রথম পদক্ষেপ।
চলবে…….
অনেক শব্দের বানানে ভূল আছে যা কি-বোর্ড জটিলতার কারনে হয়েছে। পরে ঠিক করে নিবো ইনশাল্লাহ। পুরো বইটি ধাপে ধাপে ট্রান্সলেইট করার প্লান আছে। সবাই সাথে থাকুন।
পিংব্যাকঃ ” টু বি অ্যা মুসলিম” অনুবাদ প্রথম ভাগ-০১ | স্বপ্নচূঁড়া
পিংব্যাকঃ “টু বি অ্যা মুসলিম- ফাতি ইয়াকান” প্রথম ভাগ | স্বপ্নচূঁড়া