লিডারশিপ নিয়ে কয়েকটি আলোচনা শুনলাম। আলহামদুলিল্লাহ! অনেক কিছু শিখলাম, দুদিন থেকে আমি খুজছিলাম যে, প্রকৃতিতে লিডারশিপ এর কোন কিছু খুজে পাওয়া যায় কিনা। বেশ কয়েকটি উদাহরন, পেয়েছি যেগুলো অনেক শিক্ষনীয়।
ঈগল পাখির কয়েকটি বৈশিষ্ট্যর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য তিনটি তুলে ধরলাম।
১) ঈগল পাখি সাধারনত ৭০ বছরের মত বাঁচে। মজার ব্যাপার হলো এদের বয়স যখন ৩০-৪০ বছর হয় তখন তাদের একটি শারীরিক পরিবর্তন হয়। কারন এই পুরনো নখ আর শিকারের উপযোগী থাকেনা, তার হাতে দুটো অপশন থাকে হয় মৃত্যু নয়ত শারীরিক পরিবর্তন। তাই সে শারীরিক পরিবর্তনে চলে যায়। তা না হলে সে ৩০ বছরেই মারা যেত। সে সময় এরা উঁচু পাহাড়ের আড়ালে বাসায় চলে যায়। সেখানে গিয়ে ঈগল নিজের চঞ্চু/ঠোট পাথরে আঘাত করে করে ভেংগে ফেলে যতক্ষন না পুরো ঠোট খসে পড়ে। এরপর সে অপেক্ষ করে নতুন ঠোট বের না পর্যন্ত। এরপর সে তার নখর দিয়ে পাথরে আঘাত করে এভাবে সে তার নিজের পুরাতন নখর কে খুলে ফেলে এবং অপেক্ষা করে নতুন নখরের জন্য। নতুন নখ তৈরী হলে এবার সে তার পালকগুলোলে খুলে ফেলে ঠোট আর নখের মাধ্যমে যতক্ষন না তার শরীর সম্পূর্ণ পালকহীন হয়ে যায়। নতুন পালক উঠা না পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে। এভাবে সে ১৫০ দিন পার করে শারীরিক পরিবর্তনের জন্য। ১৫০ দিন পর সে নতুন জীবন ফিরে পায়। জীবনের বাঁচার জন্য পরিবর্তন কে মেনে নেওয়া জরূরী।
শিক্ষাঃ ভিশনারী লিডার রা সব সময় ওপেন মাইন্ডের হয়, যখন সারভাইভ করার প্রশ্ন চলে আসে, যখন প্রশ্ন আসে এগিয়ে যাওয়ার প্রকৃতিগতভাবে পরিবর্তন জরূরী হয়ে পড়ে।
২) ঈগল পাখির যখন বাচ্চা একটু বড় হয় তখন সে তার ´বাচ্চাগুলোকে বাসা থেকে বের করে বাইরে ছুড়ে দেয়। যাতে বাচ্চারা সাহসী হতে শিখে ভয় কেটে যায়। এভাবে সে বাচ্চাগুলো কে শিক্ষা দেয়।
শিক্ষাঃ ট্রেনিং খুবই জরূরী যেটি একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার।
৩) ঈগল পাখি ঝড়কে পছন্দ করে, ঝড়ো হাওয়ায় সে উড়তে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। ঝড়ের সময় অন্যসব পাখি যখন লুকায় তখন ঈগল পাখি আরামে উড়ে বেড়ায়। ঈগল ঝড়ের বাতাসের গতিকে কাজে লাগিয়ে বাতাসের গতির বেগকে কাজে লাগিয়ে নিজের শক্তির কম ব্যবহার করে উড়ে বেরায়।
শিক্ষাঃ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের দুঃখ, কষ্ট, বাধাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরাও টিকে থাকতে পারি অনেক স্বাচ্ছন্দ্যর সাথে।
কচ্ছপ একটি অদ্ভুত প্রাণী, তার খোলস টা বড়ই অদ্ভুত। প্রতিকূল পরিবেশে সে তার খোলসের নিচে মাথা লুকিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। শরীরের নরম জিনিসগুলোকে রক্ষা করে ক্ষতির হাত থেকে। সে চুপচাপ পড়ে থাকে যাতে কেউ বুঝতে না পারে।
ঠিক তেমনি প্রতিকুল পরিবেশে আমরা নিজেদের ঈমান ও আমল গুলোকে এভাবে রক্ষা করতে পারি। পরিবেশ অনুযায়ী আচরন করা আমাদের জন্য হয়ে উঠতে পারে নতুন সম্ভাবনার।
ইসলামিক লিডারশিপের সংকট প্রকট। লিডারশিপের যেমন সংকট ঠিক তেমনি সংকট লিডার হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মীবাহিনীর। আর এর সব কিছুর মধ্যে বড় সংকট, জীবনের উদ্দেশ্য বা সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারা। আর বুঝতে পারলেও সেই অনুযায়ী কাজ না, ডেডিকেশন না থাকা। পার্থিব ও আখিরাতের জীবনের উদ্দেশ্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন না থাকা। ফলে যে গ্যাপ সেটি গ্যাপ এ থাকছে। বরং গ্যাপ আরো বাড়ছে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সব দুর্বলতার মাঝেও আমাদের ঈমান ও আমলকে সঠিক বুঝের সাথে করার তওফিক দান করুন। (আমিন)